কক্সবাজারের চকরিয়ায় চিংড়িজোনের কাছে অস্ত্রের কারখানার সন্ধান ও বিপুল পরিমাণ অস্ত্র-গোলাবারুদ উদ্ধারের ঘটনায় র্যাবের পক্ষ থেকে থানায় মামলা রুজু করা হয়েছে। অভিযানের সময় ধৃত ৬ জনসহ (একজন নারী) ৮ জনের নাম উল্লেখ করে মামলাটি করা হয়েছে। তবে এজাহারনামীয় অন্য দুই আসামিকে পলাতক দেখানো হয়েছে। অভিযানের পর রবিবার দিবাগত রাত সাড়ে বারোটার দিকে র্যাবের পক্ষ থেকে মামলাটি করেন র্যাব-৭ চট্টগ্রামের নিয়ন্ত্রণাধীন কক্সবাজার ক্যাম্পের ডি এ ডি (এসসিপিও/৯২০০৭২) মো. সুলতান মাহমুদ (নৌ)। ১৮৭৮ সনের আর্মস অ্যাক্টের ১৯এ ধারায় মামলাটি দায়ের করে ধৃত ৬ জনকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।
মামলার এজাহারনামীয় আসামিরা হলেন কুতুবদিয়া উপজেলার উত্তর ধুরুং এলাকার নুর মোহাম্মদের ছেলে আবদুল মান্নান ও তার ভাই আইয়ুব খান, একই উপজেলার কাজীর পাড়ার আমির হোসেনের ছেলে মো. মহিউদ্দিন, চকরিয়ার পূর্ব বড় ভেওলার ঈদমণি লালব্রিজ এলাকার মৃত আবদুল বাসেতের ছেলে নুরুল আলম, ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ছাইরাখালীস্থ ভেওলা পাড়ার মৃত ইদ্রিছ আহমদের ছেলে নুরুল্লাহ, একই এলাকার নুরুল ইসলামের স্ত্রী জনুয়ারা বেগম। এছাড়াও পলাতক দেখানো এজাহারনামীয় দুই আসামি হলেন জনুয়ারা বেগমের স্বামী ও ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ছাইরাখালীস্থ ভেওলা পাড়ার মৃত দেলোয়ার হোসেনের ছেলে নুরুল ইসলাম, চিরিঙ্গা ইউনিয়নের সওদাগরঘোনা এলাকার ইমাম শরীফের ছেলে আবদু জলিল। তবে গ্রেপ্তারের আগ পর্যন্ত এজাহারনামীয় প্রথম দুই আসামি আবদুল মান্নান ও তার ভাই আইয়ুব খান স্ব-পরিবারে চিরিঙ্গা ইউনিয়নের চরণদ্বীপ এলাকায় বসবাস করে আসছিল।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চকরিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) গৌতম সরকার চকরিয়া নিউজকে জানান, র্যাবের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের এবং পুলিশে সোপর্দ করার ৬ আসামিকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। এই মামলার তদন্ত ভার পাওয়ার পর তদন্ত কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গোপনসূত্রে খবর পেয়ে র্যাব কক্সবাজারের টিম গত রবিবার ভোর ৪টা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত ৬ ঘণ্টার অভিযানকালে রাইফেলসহ ২০টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয় এবং গোলাবারুদ উদ্ধার করে। এ সময় আবদুল মান্নান ও জনুয়ারার বাড়িতে গড়ে তোলা অস্ত্রের কারখানা থেকে অস্ত্র তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জামাদি উদ্ধার হয়।
এদিকে চকরিয়ায় র্যাবের অভিযানে স্মরণকালের বড় ধরণের অস্ত্রের চালান ও গোলাবারুদ উদ্ধারের পর অনেকে দাবি করছেন, চকরিয়ার চিংড়িজোনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন নামে অসংখ্য দস্যু-বাহিনী তৎপর রয়েছে। এসব বাহিনীর একাধিক সংখ্যক অস্ত্র তৈরির কারখানা এবং অস্ত্রের ভান্ডার মজুদ রয়েছে। রবিবারের কয়েকঘন্টার অভিযানে মাত্র একটি বাহিনীর অস্ত্রভান্ডার তছনছ হলেও চিরিঙ্গা ইউনিয়নের বুড়িপুকুর, সওদাগরঘোনা, চরণদ্বীপসহ নানা স্থানে এসব বাহিনীর অস্ত্রের ভান্ডার মজুদ রয়েছে।
র্যাব কক্সবাজার ক্যাম্পের উপ-পরিচালক (কোম্পানী কমাণ্ডার) মেজর মাহমুদ হাসান তারিক চকরিয়া নিউজতে বলেন, ‘চকরিয়ার চিংড়িজোন বা তৎ সংলগ্ন এলাকায় যতই সন্ত্রাসী বা দস্যু বাহিনী থাকুক কাউকে ছাড় দেওয়া হবেনা। ইতিমধ্যে বড় ধরনের সফল অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে ।
পাঠকের মতামত: